উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশ অনেকটাই এগিয়ে। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৭ শতাংশ এখন পূরণ করছে দেশি ওষুধ। পাশাপাশি প্রায় ১৫০টি দেশে রপ্তানিও করছে বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানিগুলো। কিন্তু এ সাফল্যের বিপরীতে দেশজুড়ে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ওষুধ বিপণনের ঘটনা ঘটছে অবাধে।
এদিকে, বার বার অভিযান চালিয়েও বাজারে নকল ও ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে মানুষ।
স্বাধীনতার আগে ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল থাকলেও বর্তমানে দেশের তৈরি ওষুধ ৯৭ শতাংশ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হয় বিশ্বের প্রায় দেড় শতাধিক দেশে। একই সঙ্গে, গেল পাঁচ বছরে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে, শুধু সাফল্যই নয়, এর বিপরীতে দেশজুড়ে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ওষুধ বিপণনের ঘটনাও ঘটছে ব্যাপক হারে। আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী ঘন ঘন অভিযান চালিয়েও দমাতে পারেনি এমন অপকর্ম।
শুধুমাত্র, ২০১৯ সালে নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ হাজার ১৪৫টি মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে ঐ বছর ১২ কোটি ৪১ লাখ ৬ হাজার টাকা জরিমানাও আদায় করা হয়। ৩৯ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড।
বর্তমানে রাজধানীতে দেদারসে তৈরি হচ্ছে নকল ও ভেজাল ওষুধ। এই মুহূর্তে প্রশাসনের সব নজরদারি করোনা কেন্দ্রিক হওয়ায়, এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে প্রতারক চক্র। বিক্রিও হচ্ছে সব নামি দামি ফার্মেসিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষিদ্ধ ও মানহীন ভেজাল ওষুধ সেবনের ফলে কিডনি ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে লাখ লাখ মানুষ। তবে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে জনবান্ধব খাতে পরিণত করতে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি এসব প্রতারকদের আইনের আওতায় আনা হবে এমন প্রত্যাশা ভুক্তভুগিদের।